আমাদের জীবনের বড় বড় সব পাওয়া এবং না পাওয়া ছোট ছোট জিনিশ থেকেই হয়। রাস্তাতে গাড়ি চালানোর সময় যত বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে তার বেশির ভাগ ঘটে ছোট ছোট কিছু ভুল থেকে। আবার ছোট ছোট কিছু ইম্প্রভমেন্ট বড় বড় সফলতা নিয়ে আসে।
যেমন ধরেন একজন ওয়েটার। ছোট করে একটা হাসি দিয়ে যখন আপনাকে খাবার সার্ভ করবে তখন আপনি বেটার ফিল করবেন। সেই রেস্টুরেন্টের ব্যাবসা বাড়বে।
প্রফেশনালি যারা সফল তারা আসলে এমন কিছু করে অথবা এমন ভাবে ভাবে যা হয়ত আমরা করি না অথবা ভাবিনা। কিন্তু তাদের লাইফ স্টাইল, তাদের উক্তি আমাদের জীবনে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দুই ভাবেই প্রভাব বিস্তার করে। তাদের উক্তি গুলো অনেক সময় টনিকের মত কাজ করে।
আজ আমি আপনাদের সাথে বেশ কিছু আত্মবিশ্বাস নিয়ে উক্তি শেয়ার করবো, যা আপনাকে অনুপ্রানিত করবে, চার্জ আপ করবে, সাহস দিবে, আত্নবিশ্বাস বাড়াবে।
আত্মবিশ্বাস নিয়ে উক্তি:
সব সফল মানুষদের মধ্যে একটা কমন গুন আছে, আর তা হচ্ছে তারা নিজেদের লাইফের রেস্পনসিবিলিটি নিজেরাই নেয়। তারা ধরে নেয়, আমার লাইফে কি ঘটবে, তা আমার উপরেই নির্ভর করবে। তারা তাদের ফেইলর গুলোর জন্য অন্য কাউকে দোষারপ করেনা। ধরেন আপনি একটা বাসায় একা থাকেন। আপনার ক্ষুধা লেগেছে। আপনি জানেন যে এখানে আপনাকে সাহায্য করার কেউ নেই। আপনি ফোনে খাবার অর্ডার দেন, অথবা কেন্টিনে যান অথবা রান্না করে খান, যেটাই করেন না কেন, আপনাকেই করতে হবে। তাই দেখবেন আপনার কোন না কোন একটা একশন নেয়া হবে।
কিন্তু যখন অন্য কেউ থাকে, তখন মনে হয়, ও রান্না করবেনে। অথবা একটা বেবস্থা করবে। তাই আপনি যখন নিজেই রেস্পনসিবিলিটি নিবেন, তখন আসলে দেখবেন আপনার কনফিডেন্স বাড়া শুরু করেছে।
মনে রাখবেন আপনার ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টের রেস্পনসিবিলিটি শুধুই আপনার, এখানে অন্য কেউ আপনাকে কিছু সহযোগিতা হয়ত করতে পারবে, কিন্তু মুল কাজটা আপনাকেই করতে হবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে কন্টেন্ট মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনগুলোর সাকসেস অনেকটা নির্ভর করে প্রপার কন্টেন্ট স্ট্র্যাটেজির উপর। আপনি যদি ইউনিক কন্টেন্ট প্ল্যানিং এর জন্য আইডিয়াগুলো জানতে ইন্টারেস্টেড থাকেন, তাহলে ৪৬৫+ সোশ্যাল মিডিয়া পোষ্ট আইডিয়া পিডিএফ টি আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হতে পারে।
একাডেমিক লাইফের পরীক্ষার কথা চিন্তা করেন। যখন আপনার প্রিপারেশন ভাল, তখন আসলে পরীক্ষার গাইড নিয়ে আপনার মাথা বেথা থাকবেনা। এমনকি কোথায় বসলেন, কার পাশে বসলেন খুব একটা বড় কিছু মনে হয় না। কিন্তু যেই পরীক্ষাতে আপনার প্রস্তুতি ভালনা, সেখানে চিন্তা করতে হয় কার পাশে বসবো, ও দেখাবেতো? কোন টিচার গাইড পড়বে ইত্যাদি।
এখানে মুল বেপার হচ্ছে প্রস্তুতি। আপনি যখন আপনার কাজের জন্য প্রস্তুতি নিবেন, তখন এমনিতেই কনফিডেন্স বাড়তে থাকবে। আপনার হাতে সব কিছুর কন্ট্রল থাকবেনা, তবে প্রস্তুতি নেয়াটা যত ভাল হবে তত বেশি আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
৩)
এই পৃথিবীর প্রতিটা মানুষই আসলে কিছু না কিছু ভয় পায়। কিছু না কিছু ভুল করে। কেউ এটা ভয় পায়তো কেউ ওটা। আবার কখনো কখনো একই জিনিশকে একাধিক মানুষ ভয় পায়। তবে কেউ বেশি পায় কেউ কম পায়। ভুল করার ক্ষেত্রেও একইরকম অবস্থা হয়। তবে সফল তারাই হয় যারা ভুল করবো, ভয় পাবো এইগুলো ভেবে থেমে যায় না। তাই ভুল করাতে কোন সমস্যা নেই। শুধু থেমে যাওয়া যাবে না। যখনই মন বলবে হবে না, তখন চিন্তা করতে হবে এভাবেতো হবে না তবে ওভাবে হতে পারে।
আমাদের আরো বড় একটা সমস্যা হচ্ছে, আমরা বেশির ভাগ সময় ভাবি মানুষ কী ভাববে? এই ছোট একটা চিন্তা আমাদেরকে আগে বাড়তে দিচ্ছেনা। সত্যি কথা হচ্ছে আমাদের আসলে তাদের উপর তেমন একটা নিয়ন্ত্রন নেই। তাই আমাদের আসলে তাদেরকে নিয়ে খুব একটা ভাবার দরকার নেই। শুধু নিজের কাজটি করে যাওয়া উচিত। আপনার সফলতাই একসময় আপনার হয়ে কথা বলবে।
এই উক্তিটা হচ্ছে আমার সবচাইতে প্রিয় উক্তি গুলোর মধ্যে একটা। আপনি যখন ডিফরেন্ট কিছু করবেন, তখন কিছু মানুষ আছেন, যারা আপনাকে সাপোর্ট দিবে, এপ্রিশিয়েট করবে। কিন্তু আমরা বেশির ভাগ সময় যারা সাপোর্ট দেয়না, এপ্রিশিয়েট করেনা, বদনাম করে, তাদেরকে বেশি প্রায়রিটি দেই। তারা কি বলছে তা জানতে চাই, শুনে মন খারাপ করি, মেজাজ খারাপ করি, ডিমোটিভেটেড হই। অথচ যারা আমাদেরকে সাপোর্ট দিচ্ছে তাদের কথা চিন্তা করে আমরা আরো অনুপ্রানিত হতে পারতাম।
৬)
বড় সফলতার জন্য আসলে আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বড় একটা ভূমিকা পালন করে থাকে। যা আমাদেরকে সাহস যোগায়। প্রতিদিন আমরা যদি আমাদের বেস্ট দিয়ে একটু একটু করে আগে বাড়তে থাকি তাহলে দেখবো আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। ১ বছর পর পেছনে ফিরে তাকালে দেখবো আমরা অনেক দুর চলে এসেছি। এটাই সফলতার সবচাইতে বড় ফর্মুলা।
৭)
আমরা এখন এমন অনেক কিছুই দেখছি যা হয়ত ১০০ বছর আগে সাধারণ মানুষের কাছে অবিশ্বাস্য ছিল। কিন্তু কিছু পাগল মানুষ ছিল, যারা ইমাজিন করেছেন যে এমন কিছু যদি থাকতো তাহলে কত ভাল হত। তার এই ইম্যাজিন, লেগে থাকার দক্ষতা, ইচ্ছা শক্তি, আত্মবিশ্বাস তাকে কাজ করতে উৎসাহিত করেছে। এবং তা এক সময় বাস্তব বানিয়ে ফেলেছে।
৮)
আমরা কিছু জিনিষ খুব ভাল পারি আর কিছু জিনিশ ভয় পাই। যা আমাদের উন্নতির পেছনে বাধা হয়ে থাকে। আমরা যদি প্রতিদিন আমাদের ভয় পাওয়া জিনিশ গুলো করার চেষ্টা করি কিছুদিন পর হয়ত দেখবো আর ভয় লাগছে না। এবং আমরা আরো অনেক দুর এগিয়ে গিয়েছি।
৯)
আমাদের চার পাশে অনেক কিছু আছে যা আমাদেরকে প্রতিনিয়ত কিছুনা কিছু শেখাচ্ছে। আমাদের উচিত তা থেকে শেখার চেষ্টা করে যাওয়া। অনেকেই মনে করেন আমি অনেক জেনে গিয়েছি। অন্যের কাছ থেকে শেখার কিছু নেই। আর এই অতিমাত্রার আত্মবিশ্বাস অনেক সময় পতনের কারণ হয়ে দাড়ায়।
১০)
শুরু করলেই শুরু হয়ে যায়। আর শুরু হলেই তা ধীরে ধীরে পরিপুর্ন হতে থাকে। তাই আমাদের শুরু করে দিতে হবে, নয়ত সেই এক দিন আর কখনোই আসবে না। শুরু করার জন্য আসলে শুধু শুরু করাটাই দরকার।
১১)
আমাদের প্রতিদিনের অভ্যাস, কাজ করার ধরন এবং কাজ আসলে আমাদের পরিচয় বহন করে। আমরা কোথায় আছি এবং কোথাও যাব তা নির্ভর করে আমরা আমাদের দিনটিকে কিভাবে সাজাচ্ছি। একটি ভাল প্রোডাক্টিভ স্বভাব আমাদের অনেক দুর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে আবার বাজে অভ্যাসগুলো আমাদের পিছিয়ে দিতে পারে।
১২)
অনেকে আছেন, যাদের প্রচুর মেধা আছে কিন্তু পরিশ্রমী না। এতে তারা পিছিয়ে পরে। কেউ যদি কম মেধাবী হয়েও প্রচুর পরিশ্রম করে সে অনেক দুর এগিয়ে যাবে। তাই পরিশ্রমের বিকল্প নেই। আর পরিশ্রম করলে অভিজ্ঞতা হয়। অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকা মানে সেই ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে এক্সপার্ট (মেধাবী) হিসেবে তৈরি করা।
১৩)
অনেকেই মনে করে থাকে, সফলতার জন্য আসলে মনে হয় কোন সিক্রেট ফরমুলা আছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে জীবনে আসলে তেমন কোন গোপন ফর্মুলা নেই যেটা দিয়ে মানুষ রাতারারি সফল হয়ে যাবে। সফল হওয়ার জন্য পরিশ্রম করে যেতে হবে।
১৪)
আমাদের জীবনে আমরা যতই একা একা থাকতে চাই না কেন, আমাদের লাইফ আসলে আমরা এবং আমাদের জীবনের সাথে কানেক্টেড সবার সমষ্টি। তাই আমাদের আসে পাশের মানুষ গুলা নিয়ে ভাবতে হবে। অন্যথা অনেক চেষ্টার পরেও হয়ত খুব বেশি সুখী হওয়া যাবে না।
১৫)
কেউ আপনাকে সাহায্য না করলে, অথবা আপনাকে “না” বললে মন খারাপ করা যাবে না। বরংচ এটি আপনাকে আর দক্ষ্য করে তুলবে এবং আপনি অনেক দুর এগিয়ে যাবেন। মনে রাখতে হবে আপনার লাইফের সব কিছু করার জন্য আপনাকেই কাজ করতে হবে। অন্য কেউ সহায়তা করলে ভাল, কিন্তু না করলেও থেমে থাকা যাবে না।
আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এই আর্টিকেলটিও পড়ে দেখতে পারেন।
এখন একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, উক্তি গুলো কিন্তু আমাদের সফলতা এনে দিবে না, আত্মবিশ্বাসও আপনাকে সফলতা এনে দিবে না। এইগুলো হচ্ছে শুধু মাত্র এক ধরনের নিয়ামক। যা আপনাকে সঠিক পথে লেগে থাকতে সাহায্য করবে। মানষিক শক্তি দিয়ে সাহায্য করবে। সফলতা আসবে আপনার পরিশ্রমে, লেগে থাকা এবং এক্সিকিউশনের উপর। তাই কাজে নেমে পড়ুন। সফলতা আসবেই। যখনই আত্মবিশ্বাস জনিত সমস্যাতে পড়বেন, এই আর্টিকেল গুলো পড়ুন। আবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন।
আমার ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন, আর আর্টিকেলটি শেয়ার করে বন্ধুদেরকেও সাহায্য করুন।