আউট বাউন্ড এবং ইনবাউন্ড মার্কেটিং নিয়ে অনেকেই কনফিউজড হয়ে থাকে। কনফিউজড হবার যথেস্ট কারনও আছে। যেমন ইমেইল মার্কেটিং আউটবাউন্ড মার্কেটিং এর মধ্যেও পরে, আবার ইনবাউন্ড মার্কেটিং এর মধ্যেও পরে। এই পোস্টে আমি আপনাদের জন্য কন্সপেটটা ক্লিয়ার করে দেয়ার চেষ্টা করছি।
আউট বাউন্ড মার্কেটিং অনেক পুরানো স্ট্র্যাটেজি। এমন কি মার্কেটিং শব্দের আবিস্কারের আগে থেকেও। যেমন ধরেন আমি আর আপনি কথা বলছি, হঠাৎ করে কেউ একজন আমাদের সামনে আসলো, এসে বললো ভাইয়া, আপনি কোন ব্র্যান্ডের মোবাইল ব্যাবহার করেন? তারপর তিনি তার ব্র্যান্ডের একটা বিজ্ঞাপন আপনাকে ধরিয়ে দিয়ে গেল। আবার ধরেন আপনি আমার এই ব্লগ পোস্ট পরছেন, পরার মধ্যেই হঠাৎ করে একটা পপ আপ বিজ্ঞাপন চলে আসলো, আলো আলো, বেশি আলো, শব্দে শব্দে, মন মাতালো, অলিম্পিক অলিম্পিক ব্যাটারি। এইগুলো সবই আউট বাউন্ড মার্কেটিং এর অংশ। মুল কথা হচ্ছে, আপনি চাচ্ছেন না, তবে আপনাকে দেখানো হচ্ছে, শোনানো হচ্ছে। এই গুলো সব আউট বাউন্ড মার্কেটিং এর অংশ।
ইনবাউন্ড মার্কেটিংটা হচ্ছে ভিন্ন। এখানে মুলত কন্টেন্ট তৈরি করা হয় এডুকেট করার জন্য। এটা টু ওয়ে কমিউনিকেটিভ একটা এপ্রোচ।
আপনারা যারা আমার ব্লগে নিয়মিত চোখ বুলান তারা এ কারনে চোখ বুলান কেননা আমি এখানে ভ্যালুয়েবল কন্টেন্ট শেয়ার করি। তারমানে আপনি এখানে এসেছেন মার্কেটিং রিলেটেড কন্টেন্ট পড়ার জন্যই। এখন
আমি যদি আমার এক কন্টেন্ট এর মধ্যেই আমার আপকামিং কোর্সের লিঙ্ক দেই, আপনাদেরকে কোর্স সম্পর্কে জানাই, এটা হবে ইনবাউন্ড মার্কেটিং।
ফেসবুক গ্রুপ, অন্য কারো ব্লগে কন্ট্রিবিউট করা, সোশ্যাল চ্যানেল গুলোতে এংগেইজ থাকা সব কিছুই ইনবাউন্ড মার্কেটিং এর অংশ।
আরো সহজ ভাবে যদি বলি, আপনি যখন টোটালি অন্য কিছু করছেন, কিন্তু মার্কেটিং ম্যাটেরিয়াল আপনার সামনে চলে আসছে সেটা আউটবাউন্ড মার্কেটিং। যেমন ফেসবুক নিউজফিডে আপনি অবশ্যই বিজ্ঞাপন দেখার জন্য চোখ বুলান না, কিন্তু আপনি রিলেভেন্ট, নন রিলেভেন্ট বিজ্ঞাপন দেখেন। তাই এই বিজ্ঞাপন নিয়ে যারা কাজ করছে, তারা মুলত আউট বাউন্ড মার্কেটার। একই বেপার ইউটিউবে ভিডীও দেখার ক্ষেত্রে। সেখানেও আপনি বিজ্ঞাপন দেখছেন ঠিকই কিন্তু তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আপনার ঐ মুহুর্তের দেখা ভিডিও কন্টেন্টের চাইতে আলাদা।
এখন একটা সময় ইমেইল মার্কেটিং কে আউটবাউন্ড মার্কেটিং হিসেবে ধরা হত, কেননা তখন মুলত ইমেইল কালেক্ট করে রেন্ডমলি সবাইকে ইমেইল সেন্ড করা হত, রিলেভেন্সি, ইন্টারেস্ট এইগুলোকে ওভাবে মাথায় রাখা হত না। তাই ওটা আউটবাউন্ড মার্কেটিং এর কন্সেপ্ট এর মধ্যে পড়তো। কিন্তু এখন ইমেইল মার্কেটিং অনেক বেশি টারগেটেড। সাবস্ক্রিপশন অরিয়েন্টেড। আমার ইমেইল লিস্টে যারা সাবস্ক্রাইব করেছেন তারা এজন্যই করেছেন, যাতে আমি তাদেরকে ইমেইল করে ট্রিক্স শেয়ার করি। সে ক্ষেত্রে এটা ইনবাউন্ড মার্কেটিং এর পার্ট হয়ে যাচ্ছে।
ইনবাউন্ড মার্কেটিং এ মুলত দুই দিক দিয়েই কমিউনিকেশন হয়ে থাকে। আর আউটবাউন্ড মার্কেটিং এ এইটা এক দিকের। ইনবাউন্ড মার্কেটিং এ মুলত কাস্টমার আপনার কাছে আসবে, যেমন এসইও, রেফারেল, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। আউটবাউন্ড মার্কেটিং এ মুলত আপনি কাস্টমারের কাছে যাবেন, যেমন যে কোন ধরনের এডভারটাইজমেন্ট। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এডভারটাইজমেন্টও ইনবাউন্ড মার্কেটিং এর মধ্যে পরে থাকে।
যেমন সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং। এখানে যদিও এড দেখাচ্ছে, কিন্তু এটাও কিন্তু কাস্টমার সার্চ করার পরেই দেখাচ্ছে, তারমানে কাস্টমার আপনার কাছে আসছে সার্চ করে।
ইনবাউন্ড মার্কেটিং আপনার লং টার্ম বিজনেস রিটার্নের জন্য খুবই ইফেক্টিভ। কেননা ইনবাউন্ড মার্কেটিং আপনার ব্র্যান্ডের বিশ্বাস যোগ্যতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে, যার ফলে ফিউচারে অনেক ডিরেক্ট ভিজিটর পাওয়া যায়, কনভার্শন তুলনা মুলক ভাবে অনেক বেশি হয়।
আবার আউটবাউন্ড মার্কেটিং দিয়ে আপনি যেকোন একটা ব্র্যান্ডকে শুরু থেকেই সেল জেনারেট করতে সাহায্য করতে পারবেন। আবার ব্র্যান্ড ভিজিবিলিটি বাড়িয়ে আপনার ব্র্যান্ডের নাম বেশী মানুষের মস্তিস্কে ইঞ্জেক্ট করতে পারবেন। তবে কনভার্শন রেট তুলনা মুলক ভাবে একটু কম হয়, ডাটা এনালাইসিস করাটাও একটু কষ্টসাধ্য।
ইনবাউন্ড মার্কেটিং রিলেটেড ট্রিক্স গুলো এখানে পাবেন।
এরপরেও যদি আপনার কোন কনফিউশন থেকে থাকে, তাহলে কমেন্ট করে আমাকে জানাতে পারেন, আমি সাহায্য করার চেষ্টা করবো।