fbpx

টারগেটেড ট্রাফিক পাওয়ার সহজ উপায় (পর্ব ১)

ব্রায়ান ট্রেসির থেকে শুনা একটা কথা আমি সবসময় বলে থাকি, ব্যাবসার উদ্দেশ্য বা গোল হচ্ছে কাস্টমার ধরা এবং ধরে রাখা, প্রফিট হচ্ছে তার ফল। তাই আপনারা যারা ফ্রীল্যান্সিং করছেন অথবা ব্যাবসা করছেন, তাদের মাথায় এখনই এটা ঢুকিয়ে ফেলতে হবে, যে আমি যাই করি, আমার প্লান এবং স্ট্রাটেজির মূলে থাকবে কিভাবে কাস্টমার ধরা যায় এবং তাদের কে ধরে রাখা যায়।

আমি যেহেতু অনলাইন প্রফেশনাল তাই আমি মূলত অনলাইন মাধ্যম নিয়েই লিখবো। এটা একটা সিরিজ পোষ্ট হবে তাই হয় এটা পড়ার দরকার নেই অথবা পুরাটাই পড়তে হবে। অন্যথায় পুরো রিটার্ন পাওয়া যাবেনা।

অনলাইনে কাস্টমার ধরার জন্য প্রথমেই আপনার দরকার হবে একটা ওয়েবসাইট। বাংলাদেশে অনেকেই শুধু এফ কমার্স নিয়ে কাজ করছেন অথবা ভাবছেন, তারা অনেকেই রিসার্চ করেন না। যদি করতেন তাহলে তারা বুঝতে পারতেন একটা ওয়েব সাইট তাদের ব্যাবসাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে পারতো। সেটা নিয়ে বিস্তারিত আরেকদিন লিখবো।

তো প্রথমেই দরকার হচ্ছে একটা ওয়েবসাইট। এখন আমাদের অনেকের মধ্যেই কাজ করে একটা ওয়েবসাইট বানানো অনেক কঠিন কাজ। আসলে কিন্তু তা নয়। ওয়ার্ডপ্রেসের যুগে আপনি চাইলেই একটু সময় নিয়ে রিসার্চ করলে একটা ওয়েব সাইট বানিয়ে ফেলতে পারবেন। হয়তোসেটা ঐ লেভেলের গুড লুকিং হবে না। আবার আপনি যদি কোন পেইজ বিল্ডার ব্যাবহার করেন তাহলে কাজটা সহজ হয়ে যাবে। এছাড়াও ওয়েবে আসলেই ওয়ার্ডপ্রেস রিলেটেড রিসোর্সের অভাব নেই।

তবে প্রফেশনালদের জন্য, বিশেষ করে ইকমার্স অথবা সার্ভিস ওরিয়েন্টেড ওয়েব সাইটের ক্ষেত্রে আমি বলবো প্রফেশনাল কারো সার্ভিস নিতে। বাংলাদেশের অনেক অভিজ্ঞ প্রফেশনাল আছেন যারা লোকাল মার্কেটে তুলনামূলক ভাবে কম রেটে ওয়েব ডিজাইন সার্ভিস দিয়ে থাকেন। আপনারা আমাদের সাথেও যোগাযোগ করতে পারেন। আপনি যদি স্ট্রার্টআপ প্রফেশনাল হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য আমাদের কাস্টমাইজ কোটেশন থাকবে। যা কর্পোরেট চার্জের চাইতে যথেষ্ট কম হবে।

যাই হোক এইবার আসি ট্রাফিক জেনারেশন নিয়ে। বাংলাদেশের মার্কেটে যারা ব্যাবসা করছেন তাদের ট্রাফিক জেনারেট করার তুলনামূলক ভাবে সহজ মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক। বাংলাদেশের মোটামুটি সব ব্র্যান্ড ফেসবুক ব্যাবহার করে। বড় ব্র্যান্ডগুলো তুলনা মুলক ভাল করছে, কেননা তাদের বাজেট আছে। তারা প্রফেশনাল মার্কেটারদের সার্ভিস নিচ্ছে। যার ফলে তারা খুবই ভাল কন্টেন্ট তৈরি করছে, এবং সেই কন্টেন্টের রিচ বাড়াতে পেইড ক্যাম্পেইনে ইনভেস্ট করছে। কিন্তু ছোট এবং মধ্যম ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে আশানুরূপ ফলাফল আনতে পারছে না।

এর একটা বড় কারন হচ্ছে তাদের স্কীল এবং বাজেটজনিত সমস্যা। তাদের একই সাথে অনেক গুলা কাজ করতে হয়। বাজেট রাতারাতি বাড়ানো সম্ভব না হলেও স্কীল ডেভেলপ করা সম্ভব। আর যখন ক্লায়েন্ট / কাস্টমার ফ্লো বেড়ে যাবে তখন তারা যে কোন মার্কেটারের পেইড কন্সালটেন্সি সার্ভিস নিতে পারেন।

আজ আমি ট্রাফিক জেনারেট করার যেই কার্যকরি পদ্ধতিটা নিয়ে আলোচনা করবো, তা হচ্ছে ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট।

ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট

ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট বলতে আসলে কি বুঝবেন?

মুলত আপনার কাস্টমার / ভিজিটর / ফ্যান্স এবং ফলোয়াররা যখন আপনার ব্রান্ড কে ঘিরে কন্টেন্ট তৈরি করবেন সেটাকে ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট বলে। এটা ভিডিও হতে পারে। টেক্সট কন্টেন্ট হতে পারে, ইমেইজ হতে পারে। মার্কেটিং ক্যাম্পেইনগুলো থেকে বেটার রেসপন্স পাওয়ার যে কয়টি মাধ্যম আছে তাদের মধ্যে ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট অন্যতম।

বেশির ভাগ ছোট এবং মিডিয়াম এমনকি বেশ কিছু বড় ব্রান্ডকেও আমি দেখেছি, তারা ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট নিয়ে ভাবে না। তাদের ফেসবুক বিজনেস পেইজের মূল কাজ হচ্ছে ইমেইজ পোষ্ট করা এবং বুস্ট করা, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রোডাক্ট ইমেইজ অথবা ভিডিও। তাদের একটিভিটি অনেকটাই সেলস মেশিনের মতো। এখানে তাদের সাথে তাদের কাস্টমারের কোন রিলেশনশিপ বিল্ডআপ হয়না।

কন্টেন্টকে প্রানবন্ত করার টিপ্স জানতে পড়ে নিনঃ কন্টেন্ট কে প্রানবন্ত করার উপায় সমুহ

ইউজার জেনারেটেড ক্যাম্পেইন কিভাবে তৈরি করা যেতে পারে?

এটা অনেক ভাবে করা যেতে পারে। এক এক ব্যাবসার ধরনের উপর এক এক রকম স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে হয়। সার্ভিসের ক্ষেত্রে এটা এক রকম হবে, প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে অন্যরকম। তবে নিচের কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট তৈরি করিতে পারেন।

১) ফিডব্যাক জানতে চাওয়াঃ

আপনি আপনার ক্রেতা অথবা ফলোয়ার দের কাছ থেকে সরাসরি ফিডব্যাক জানতে চাইতে পারেন। এই ক্ষেত্রে আপনার প্রশ্নটা একটু স্পেসিফিক হতে হবে। যার উত্তর এক দুই লাইনে দেয়া যায়। সোস্যাল পেইজের কন্টেন্ট তৈরিতে এটা খুবই কার্যকরি একটা পদ্ধতি।

২) ফটো কন্টেস্টঃ

যেকোন বিশেষ দিনে অথবা বিশেষ কোন প্রোডাক্ট নিয়ে আপনি ফটো কন্টেস্ট আয়োজন করতে পারেন। কিছুদিন আগে নিজল ক্রিয়েটিভ একটা ফটো কন্টেস্টের আয়োজন করেছিল। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে।

৩) ব্লগিং কন্টেস্টঃ

আবার প্রিয়.কম যখন তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল তারাও বেশকিছু কম্পিটিশন নিয়ে এসেছিল। ব্লগ প্রতিযোগিতা: আমার ফ্রিল্যান্সিং জীবন। সে সময় অনলাইন প্রফেশনালরা অনেকেই অংশগ্রহন করেছিলেন এবং তাদের মাধ্যমে প্রিয়.কম এর রিচ অনেক বেড়ে গিয়েছিল। কেননা এই সমস্ত প্রোতিযগিতার ক্ষেত্রে মুলত ভোটিং সিস্টেম হয় সোস্যাল শেয়ার, লাইক এবং কমেন্টের উপর। তারমানে আপনি শুধু ইউজার জেনারেটেড কন্টেনই তৈরি করছেন না, আপনি যথেস্ট সোস্যাল সিগনাল এমনকি ব্যাকলিংক পর্যন্ত জেনারেট করতে পারবেন।

৪) ডিস্কাউন্ট অফারঃ

আমাদের কফি শপের শুরুর দিকে আমরা চেকইন ডিস্কাউন্ট দিয়েছিলাম, এতে আমরা এক সাথে দুইটা সুবিধা পেতাম। যে খরচটা আমরা ফেসবুকে বিজ্ঞাপনের জন্য খরচ করতাম, তা আমরা আমাদের কাস্টমারকে ডিস্কাউন্ট হিসেবে দিয়েছিলাম। আর সে এই ডিস্কাউন্ট পাবার জন্য ফেসবুকে চেক ইন দিত সাথে ছবি আপলোড করতো। এতে আমাদের রিচ বেড়ে যেতো। এভাবে ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট আমাদের কে নতুন কাস্টমার পেতে সাহায্য করেছে।

বিস্তারিত জানতে এই পোষ্টটি পড়তে পারেনঃ 6 Proven Methods For Local Business Promotion

তাই টারগেটেড ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য আপনাকে ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট নিয়ে ভাবতে হবে। কিভাবে ইউজার জেনারেটেড কন্টন্ট ডেভেলপ করবেন, কিভাবে তাদের সাথে ভাল সম্পর্ক তৈরি করবেন সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। পরবর্তি পোষ্টে আমি শেয়ার করবো ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট ডেভেলপ করার আরো কিছু ইফেক্টিভ পদ্ধতি এবং কেস স্টাডি।

রিলেটেড পোস্ট:

Scroll to Top