অনলাইন ব্যাবসার সফলতার মূল মন্ত্র গুলোর একটি হচ্ছে এর কন্টেন্ট। কেউ যখন আপনার ওয়েবসাইট ভিসিট করলো তখন আসলে সে তার দরকারি তথ্য অথবা পন্য খুজছেন, একইভাবে আপনিও আপনার পন্য / সেবাকে প্রমোট করার জন্য কিছু দরকারি তথ্য উপস্থাপন করছেন। এই তথ্য উপস্থাপন করার জন্য আবার আপনি ভিন্ন ভিন্ন উপায় ব্যবহার করতে পারেন। যেমন আপনি চাইলে টেক্সট কন্টেন্ট ব্যাবহার করতে পারেন আবার চাইলে ভিডিও তৈরি করতে পারেন। আবার চাইলে অডিও কন্টেন্ট অথবা ইমেজতৈরি করতে পারেন। এখন কথা হচ্ছে কন্টেন্ট তৈরি করে ফেলা মানেই এমন নয় যে এখন হুরহুর করে টাকা আসতে থাকবে, ক্রেতা বাড়তে থাকবে। সফলতার জন্য দরকার কোয়ালিটি কন্টেন্ট।কোয়ালিটি কন্টেন্ট তৈরি করতে দরকার পর্যাপ্ত সময় এবং শ্রম। আর এই যায়গাতেই অনেকে পিছিয়ে পরে আর ফলস্রুতিতে ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট তৈরি করতে থাকে। ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট তৈরি করলে সাময়িক কিছু সুবিধা পাওয়া যায় কিন্তু একসময় বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতেহয়। অপর দিকে ইউনিক কন্টেন্ট তৈরি করতে অনেক কষ্ট হলেও তা আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বহুদুর। আসুন দেখি ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের ক্ষেত্রে কি ধরনের ভুমিকা রাখে।
প্রথমেই দেখে নেই ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট কি?
একই কন্টেন্ট যদি ওয়েবের একাধিক পেইজে থাকে তাহলেই তা ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট। এই ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট একই ওয়েবসাইটের ভিতরে হতে পারে আবার ভিন্ন ওয়েবসাইটের ভিতরেও হতে পারে। কখনো পুরো কন্টেন্ট (১০০ ভাগ) ডুপ্লিকেট হতে পারে, কখনো একটা নির্দিষ্ট অংশ ডুপ্লিকেট হতে পারে।
কিভাবে কন্টেন্ট ডুপ্লিকেট হয়?
কন্টেন্ট ডুপ্লিকেট মুলত দুই ভাবে হতে পারে।
১) ইচ্ছাকৃত ভাবেঃ
অনেক সময় অনেকেই কন্টেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সময় এবং শ্রম দিতে চায় না। সেক্ষেত্রে কেউ কেউ অন্য কোন ওয়েবসাইট থেকে ভাল একটি কন্টেন্ট নিয়ে তার নিজের ওয়েবসাইট এ হুবুহু পোষ্ট করে দেয়। আবার অনেকে পুরো আর্টিকেল পোষ্ট না করে বেশ কয়েকটি আর্টিকেল থেকে একটু একটু করে কপি পেষ্ট করে একটা আর্টিকেল তৈরি করে।
২) ওয়েব ডেভেলপমেন্ট জনিত সমস্যার কারনেঃ
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট জনিত সমস্যার কারনে আপনার নিজের অজান্তেই আপনার ওয়েবসাইটের ভিতরে একই কন্টেন্ট নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ইউআরএল তৈরি হতে পারে। প্রতিটি ইউআরএল এক একটি আলাদা পেইজ হলেও পেইজের ভিতরের কন্টেন্ট কিন্তু একই থেকে গেল। এভাবেই ত্রুটিপূর্ণ লিঙ্ক স্ট্রাকচার এর কারনে একই কন্টেন্ট নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন পেইজ তৈরি হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যাটি সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে ইকমার্স সাইট গুলোর ক্ষেত্রে।
সার্চ ইঞ্জিনের সাথে ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট এর সম্পর্ক
=> ধরে নিন আপনি একটি ব্যাবসার সাথে সম্পৃক্ত। আপনি আপনার ক্রেতাকে সেই পণ্যগুলোই দেখাবেন যেগুলোর কোয়ালিটি ভাল, যেগুলো ক্রেতা কিনতে আগ্রহী হবে। ঠিক একই ভবে গুগল তার ভিসিটরদের সেই রেজাল্ট গুলোই দেখাতে চায় যার কোয়ালিটি ভাল। আমি আগেই লিখেছি, ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট তৈরিই হয় ওয়েব ডেভেলপমেন্ট জনিত সমস্যার কারনে অথবা ইচ্ছাকৃত ভাবে তৈরি করা হয়সময় এবং শ্রম বাচানোর জন্য, তারমানে এ থেকে স্পষ্ট যে, যেই সাইট গুলো ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট ব্যাবহার করে সেগুলো কোয়ালিটি সাইট নয়। তারমানে এই সমস্ত সাইটগুলোর সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্ক ভাল হবার সম্ভাবনা কম।
=> গুগল যখন একই কন্টেন্ট অনেক গুলো পেইজে (ইউআরএল) পায় তখন গুগল কিছু ফ্যাক্টর কে এনালাইজ করে থাকে। আর এই এনালাইজ থেকে গুগল সিদ্ধান্ত নেয় কোন পেইজটি সেরা এবং গুগল সার্চ ইঞ্জিন সেই পেইজটিকেই তাদের সার্চ রেজাল্টে দেখায়। গুগলের এনালাইজ করা ফ্যাক্টর গুলোর মধ্যে পেইজ এর বয়স অথবা ইনডেক্সিং টাইম হচ্ছে অনেক গুরুত্বপুর্ন একটি ফ্যাক্টর। তাইযে পেইজটি প্রথমে ইন্ডেক্স হয়েছে গুগল সেই পেইজটিকেই অরিজিনাল হিসেবে ধরে থাকে। এছাড়াও সাইটের অথরিটি, পেইজ র্যাঙ্ক, ব্যাকলিংক এর সংখ্যা এবং কোয়ালিটি এই ব্যপারগুলাও প্রভাবিত করে থাকে। তাই একটি নতুন পোষ্ট পাবলিস করার পর যত দ্রুত সেটিকে ইন্ডেক্স করানো যায় ততটাই ভাল। যাতে কেউ আপনার পোষ্টটিকে কপি করে কোন পোষ্ট লিখলেও কোন এসইও সুবিধা না নিতে পারে। কিভাবে একটি পোষ্টকে ১০ মিনিটের মধ্যে ইন্ডেক্স করবেন তা জানতে নিচের পোষ্টটিপরুন।
->ব্লগ পোষ্ট ইন্ডেক্স করুন ১০ মিনিটে<-
=> এছাড়াও একই সাইটের মধ্যে একাধিক ডুপ্লিকেট পেইজ থাকলে ডুপ্লিকেট পেইজ গুলোতে অনাকাংখিত পেইজ র্যাঙ্ক পাস হতে থাকে, যা কোন কাজে লাগে না।এবং কোন কোন ক্ষেত্রে এটি সম্পুর্ন সাইটের র্যাঙ্কিংএর উপর বাজে প্রভাব ফেলে থাকে।
=> এছাড়াও গুগল প্রতিটি ওয়েবসাইটের একটি নির্দিষ্ট পরিমান পেইজ ইন্ডেক্স করে থাকে। পরিমানটা এক এক সাইটের জন্য এক এক রকম। ধারনা করা হয় আপনার অথরিটি যত বাড়বে, আপনার ইন্ডেক্স এর পরিমানও ততটা বাড়বে, এবং প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ ভাবে আপনার সার্চ ইঞ্জিন র্যাংক পাবার সম্ভাবনা ততটাই বাড়বে। তাই আপনার সাইটে যদি একাধিক ডুপ্লিকেট পেইজ থাকে তা নিঃসন্দেহে আপনার অথরিটির উপর একটা বাজে ধারনা দিবে। এবং অপ্রয়োজনীয় পেইজ ইন্ডেক্স হয়ে থাকবে যার কোন উপকারিতা নেই।
সব শেষে, একই ডোমেইনের মধ্যে অল্প কিছু ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট থাকাটা অতটা ভয়াবহ কিছু নয়, কিন্তু অন্য সাইট থেকে কোন কন্টেন্ট ডুপ্লিকেট হিসেবে পোষ্ট করাটি সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্কিং এর জন্য ক্ষতিকর। তবে আপনি চাইলে কেনোনিকাল ট্যাগ ব্যাবহার করতে পারেন এবং মূল অথরকে ক্রেডিট দিতে পারেন।
প্রয়োজনীয় টুল
আপনি যদি কন্টেন্ট তৈরি করার জন্য কাউকে / কোন প্রতিষ্ঠান কে নিয়োগ দিয়ে থাকেন তাহলে আপনি সেই কন্টেন্ট গুলো ব্যাবহার করার আগে দেখে নিতে পারেনকন্টেন্ট গুলো ইউনিক কিনা। আর দেখে নেয়ার জন্য সবচেয়ে ভাল টুল হচ্ছে Copyscape.com আপনি চাইলে এর ফ্রি ভার্শন ব্যাবহার করতে পারেন। ফ্রি ভার্শন ব্যাবহারের ক্ষেত্রে আপনি শুধুমাত্র ওয়েব এ পোষ্ট করার পরেই তা পরীক্ষা করে দেখতে পারবেন। আর পেইড ভার্শন এ আপনি ওয়েবে পোষ্ট করার পুর্বেই আপনার কন্টেন্ট চেইক করতে পারবেন। প্রতি ২০০০ ওয়ার্ড চেইক করার জন্য আপনার খরচ পরবে মাত্র ০.০৫ ইউএস ডলার।
আপনার মন্তব্য কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাতে অনুরোধ করছি, আর আমার সব আপডেট পেতে এখনই নিবন্ধন করুন।