আমরা সবাই যেকোন কাজ শুরু করার আগে একটা কমন সমস্যা ফেস করি, আর তা হচ্ছে ভয়। এটা সবচেয়ে বেশি কাজ করে নতুন কিছু শুরু করার সময়। যেমন আমি এই নিউ ইয়ারে একটা ফানি ভিডিও তৈরী করেছিলাম নিউ ইয়ার উইশ করার জন্য। আমার যদিও ভয় কাজ করেনি, কিন্তু আমার টিমমেটদের মধ্যে কারো কারো কিছুটা ভয় কাজ করেছিল। ভয়টা মূলত ‘আমি পারবো কি পারবো না’ এটা নয়। ভয়টা হচ্ছে অন্যরা কি ভাববে?
- স্পীচ ভাল হয় নাই!
- এইটা একটা ভিডিও হল!
- সে কি বলতেসে সে নিজেই জানেনা!
- এরকম ভিডিও হাজার হাজার আছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি ভিডিও দিয়ে শুধুমাত্র উদাহরন দিলাম। এই ব্যপারটা সব ক্ষেত্রেই সত্যি। আমাদের এই ভয়টিকে বলা হয় “Cognitive distortions”, অর্থাৎ আমরা এমন যায়গাতে ভয় পাই যা আসলে সত্যি না। মানুষ নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। তাদের আসলে আমাদের নিয়ে ভাবার তেমন সময় নেই। আর যাদের আছে, তারা অলস অথবা অকাজের। তাদের ভাবা না ভাবা দিয়ে তেমন কিছু যায় আসে না। যে কোন কাজের শুরুতে পার্ফরমেন্স এভারেজ হবে, খারাপ হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু “Cognitive distortions” টা দূর করতে পারলেই সফলতা আসবে। আপনি যা করবেন তা হয়ত সবার কাজে লাগবে না, তবে যে দুই এক জনের কাজে লাগবে আপনি তাদের কথা ভাবেন। তাদেরকেই ফোকাস করেন।
এই একটি উক্তি আমাকে অনেক সময় আউট অফ দি বক্স চিন্তা করতে উৎসাহিত করে। আমি আমার পছন্দের পাঁচটি উক্তি নিয়ে একটি ব্লগ পোস্ট পাবলিশড করেছিলাম, এখান থেকে দেখে নিতে পারেন।
আপনাদের জন্য আজ দুইটা কমন টাইপের ডিসটর্শন শেয়ার করছি যা আমরা বেশি ফেস করে থাকি।
ফিল্টারিং করাঃ
ধরুন আমি একটা ভিডিও বানালাম, অথবা ব্লগ পোষ্ট লিখলাম, অথবা একটা ইভেন্টে স্পীচ দিলাম। এখানে আমরা ভাল এবং খারাপ দুই ধরনের ফিডব্যাকই পাবো। কিন্তু অনেকেই সাইকোলজিকালি শুধু খারাপ ফিডব্যাক গুলোতেই ফোকাস করে। ভাল ফিডব্যাক গুলোকে দেখে না, অথবা ফোকাস করতে চায়না। তারমানে এই নেগিটিভ ফিডব্যাক গুলোতে ফোকাস করার কারনে তার কাছে তখন সব কিছুই নেগেটিভ মনে হয়। ডিমোটিভেটেড হয়, ভয় পায় এবং আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। অথচ সে যদি পজিটিভ দিকগুলোকে দেখত তাহলে হয়ত সে উৎসাহ পেত, এবং আরো ভাল করতে পারতো।
পার্সনালাইজড করা সব কিছুকেঃ
আমরা অনেক সময় প্রফেশনাল সব কিছুকে পার্সনালাইজ করে ফেলি। ধরেন আপনি একটা সেলস প্রেসেন্টেশনে আছেন। লিড বললো যে, ‘না, আমি এটা কিনছি না’। তার ‘না’ টা কিন্তু আপনার জন্য নয়, ‘না’ টা হচ্ছে আপনার প্রোডাক্টের জন্য। কিন্তু আমরা অনেকেই এই ‘না’ টাকে ধরে নেই সে আমাকেই না বলেছে। সেই লিডের সাথে আর মুভ করতে চাই না। অথবা সেই কাজটাতেই হয়তো আর আগ্রহ পাই না। এটাও এক ধরনের ডিশটর্শন।
এরকম আরো অনেক ডিশটর্শন আছে, যা সাইকোলজিকালি আমাদের দূর্বল করে দেয়। আমরা নতুন কিছু চেষ্টা করতে ভয় পাই। চেষ্টা না করার কারনে নতুন কোন স্কীল ডেভেলপ হয় না, ইনোভেশন হয় না, আর আমরা পিছিয়ে থাকি।
আপনি নিজেও যদি এই ধরনের চিন্তা ভাবনাতে আবদ্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে মাথা থেকে এইগুলো ঝেড়ে ফেলে দিন। স্কীল ডেভেলপ করার এক এবং একমাত্র পদ্ধতি হচ্ছে ‘রিপিটেড ট্রাই’। প্রথমে কোয়ালিট একটু খারাপ হবে, তারপর একটু ভাল এবং একসময় অসাধারন। টাচ স্ক্রীনযুক্ত মোবাইল প্রথমেই আসেনি, প্রথমে কিন্তু সেই বিশাল সাইজের বাটন ওয়ালা সেট দিয়েই শুরু হয়েছিল!
আমার আপকামিং ফ্রী ওয়েবিনার সম্পর্কে সবার আগে জানতে চোখ রাখুন এই গ্রুপে।