আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স!
অনেকেই ভয় পাচ্ছেন, সম্ভবত আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স অনেক কর্ম সংস্থান নষ্ট করে দিবে।
অনেক মানুষ বেকার হয়ে যাবে। আসলেই কি তাই?
ভয় পাওয়া কী উচিৎ?
হ্যাঁ ভয় পাওয়া উচিৎ।
তবে প্যানিকড হওয়া যাবে না।
ইতিমধ্যেই আমরা টেকনোলজি রিলেটেড এমন অনেক ট্যুলস ব্যবহার করি যা আগে মানুষ ম্যানুয়ালি করতো, কিন্তু এখন আমরা তা টের পাই না।
উদাহরণঃ
ইমপ্লয়ি এটেন্ডেন্স ডিভাইজ
সম্ভবত ১০-১৫ বছর আগেও বাংলাদেশের বেশির ভাগ অফিসে এটি ম্যানুয়াল ছিল। তার মানে এখানে হিউম্যান ডিপেন্ডেন্সি ছিল। এটেন্ডেন্স খাতাতে সাইন করতে হত এবং তা ম্যানুয়ালি চেক এবং এনালাইজ করতে হত। এখন আর এখানে মানুষ লাগে না, ডিভাইজ এবং সফটওয়ার সব ডাটা গুছিয়ে দেয়।
এক সময় ঠেলা গাড়ি ছিল, বিয়ের অনুষ্ঠানে পালকি ব্যবহার হত। ঠেলা গাড়িতে সর্ব নিম্ন ২ জন লোক লাগতো এবং পালকিতে ৪ জন। এখন পিকআপ চালাতে একজন লাগে এবং বিয়ের বড়ের গাড়ি চালাতেও একজনই লাগে।
তারমানে এই খাটে কিন্তু মানুষের উপর নির্ভরশিলতা কমেছে।
তারমানে মানুষের উপর নির্ভরশিলতা কমানোর জন্য সব সময়ই কিছু না কিছু ইনিশিয়েটিভ নেয়া হয়েছে।
তারমানে এই ট্রেন্ড নতুন কিছু না।
এটি আগেও ছিল, এখনো আছে, এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
তবে এখন টেকনোলজিকাল পরিবর্তনগুলো অনেক দ্রুত হচ্ছে।
তাই এখন হিউমেন ডিপেন্ডেন্সি দ্রুত কমবে।
কোথায় কমবে?
মূলত যেই কাজ গুলো রিপিটেটিভ সেই কাজ গুলোতে রোবট মানুষকে দ্রুত রিপ্লেস করবে।
রোবট তুলনামূলক ভাবে রিপিটেটিভ কাজগুলো দ্রুত এবং নির্ভুল ভাবে করতে পারে।
রোবটের পেছনে খরচ কম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক কালীন ইনভেস্টমেন্ট এবং কিছু মেইন্টেইনেন্স এর খরচ।
মেইন্টেইনেন্স এর ক্ষেত্রেও হিউম্যান এর চাইতে কম খরুচে। এছাড়াও হিউম্যান ইমোশন কেন্দ্রিক যে সমস্যা গুলো আছে, সেগুলো এখানে থাকাছে না।
যেমন বড় বড় প্রতিষ্ঠান গুলো শ্রমিক ইউনিয়ন, আন্দোলন, ইত্যাদি ঝামেলা গুলো এভয়েড করতে পারে রোবট ব্যবহার করে।
বাংলাদেশের ডিজিটাল ট্যুল অথবা রোবট এডাপশন ডেভেলপড কান্ট্রির চাইতে অনেক কম। এছাড়াও তুলনা মূলক ভাবে আমাদের হিউম্যান রিসোর্স লেস এক্সপেন্সিভ।
তারমানে আমাদের হয়ত এই মুহুর্তেই অনেক জব হারানোর ভয় কম।
তবে ২০-৩০ বছরের মধ্যেই অনেক পেশা রোবট/ডিজিটাল ট্যুল দিয়ে রিপ্লেস হবে। কিছু উদাহরণ দেখা যাক !
সেলফ সার্ভিস কিয়স্ক।
রেস্টুরেন্ট গুলো কিয়স্ক এর উপর বেশি নির্ভরশীল হবে।
ব্যাংক গুলো ইতিমধ্যেই এটিএম মেশিনের মাধ্যমে হিউম্যানের উপর ডিপেন্ডেন্সি কমিয়েছে অনেক।
কিউ ম্যানেজেমেন্ট কিয়স্ক গুলো এখন সবাই ব্যবহার করছে।
ইতিমধ্যেই অনেক ব্যাংক হয়ত স্টেটমেন্ট কিয়স্ক নিয়ে ভাবছে।
একাউন্টিং সফটওয়ার গুলো এখন এতটাই ম্যাচুর হচ্ছে যে হিউম্যান একাউন্টেন্ট এর উপর নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমছে।
আমাদের উচিৎ হচ্ছে প্যানিকড না হয়ে রিয়েলিটি মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেয়া।
নিজেকে জিজ্ঞ্যাস করা, আমার স্কীল কী আসলেই দ্রুত রিপ্লেস হচ্ছে? আমি কী রিপিটেড কাজের স্কীলের মধ্যে আটকে যাচ্ছি?
যদি উত্তর গুলো হ্যাঁ হয় তাহলে এখন থেকেই পরবর্তি ডিমান্ডিং স্কীল নিয়ে ভাবা যেতে পারে।
সেই অনুযায়ী কাজ শেখা শুরু করা যেতে পারে।
যদি তা করা যায়, তাহলে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স আমাদের প্রফেশনাল অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা রাখবে। আমরা এই ইন্টালিজেন্স ব্যবহার করে অনেক কঠিন সমাধান সহজেই করে ফেলতে পারব।
রিপিটেড কাজ গুলোকে দ্রুত এবং নির্ভুল ভাবে প্রসেস করতে পারবো।
আর যদি আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স এর সাথেই নিজেকে কম্পিট করতে হয় তাহলে পিছিয়ে পরবো।
তাই আমাদেরকেই প্রস্তুতি নিতে হবে, আর আমাদের প্রস্তুতির উপর নির্ভর করবে, এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স আমাদের জন্য আশীর্বাদ হবে নাকি অভিশাপ হবে!