আপনি যদি বিজনেস করতে চান এবং কী বিজনেস করবেন তা খুঁজে পাচ্ছেন না তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। এই পোস্টটি পরার পর আপনার আর অন্য কোথাও যাওয়া লাগবে না, শুধু এখানে দেখানো পয়েন্ট এবং ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে আপনাকে কাজে লেগে জেতে হবে।
আমি দুই ধরনের মানুষ দেখেছি, এক, মাথায় শুধু আজব আজব বিজনেস আইডিয়া আসে, যার বেশির ভাগের কোন ডিমান্ড নেই। দুই, যারা শুধুই ভাবতে থাকে, কিন্তু কোন রকম বিজনেস আইডিয়া খুঁজে পায় না।
এই পোস্টে আমি আপনাদেরকে ডিটেইল গাইডলাইন দিব যা আপনাকে বিজনেস আইডিয়া জেনারেট করতে সাহায্য করবে।
১) প্রথমেই এনালাইজ করুন আপনার নিজের মধ্যে কী দক্ষতা আছে?
যেহেতু বিজনেস আপনার তাই আপনাকেই দায়িত্ব নিতে হবে এটাকে স্টাব্লিশড করার। কেউ আপনার হয়ে আপনার ব্যবসা স্টাব্লিশড করে দিয়ে যাবে না। আবার স্কীল ছাড়া ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এবং বড় করা সম্ভব নয়। তাই প্রথমেই আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে যে আপনার কোন জায়গাতে দক্ষতা আছে?
এবার চিন্তা করুন আপনার দক্ষতাকে কেন্দ্র করে কী ধরনের বিজনেস শুরু করা যায়। আর এখানে আপনাকে সহায়তা করবে পয়েন্ট নাম্বার ২ এবং ৩।
২) কাস্টমারের সাথে কথা বলুন
আপনি যেই ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন সেই ইন্ডাস্ট্রির কাস্টমারদের সাথে কথা বলতে হবে। প্রচুর কথা বলতে হবে। চা খেতে খেতে কথা বলুন। কফিও খেতে পারেন। এবং বোঝার চেষ্টা করুন, বর্তমান সলিউশনের কোথাও পেইন পয়েন্ট আছে কিনা? কাস্টমারের সমস্যা বোঝার চেষ্টা করুন, সে কোথায় বিরক্ত তা বোঝার চেষ্টা করুন।
আবার কাস্টমার অনেক জায়গাতে বিরক্ত হলেও হয়ত সব জায়গাতে টাকা ইনভেস্ট করবে না। তাই এটা আপনাকে এনালাইজ করতে হবে কোন সমস্যা গুলার সমাধান কেনার জন্য কাস্টমার পেমেন্ট করতে রাজি আছে।
৩) ইন্টারনেট এর গ্রুপ গুলা ঘাঁটুন
এবার ঠিক একই কাজ অনলাইনে করুন। রিলেভেন্ট গ্রুপ এবং ফোরাম গুলাতে দেখুন মানুষ কোন ধরনের সমস্যা গুলা নিয়ে বেশি আলোচনা করে। যেই ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কাজ করবেন সেই ইন্ডাস্ট্রির অন্য ব্র্যান্ড গুলার গুগল বিজনেসে রিভিউ দেখেন, দেখেন কাস্টমার কোন ইম্প্রুভমেন্ট স্কোপের ডিমান্ড করছে কিনা, যেটাতে আপনি কাজ করতে পারেন।
৪) খুব দামি কোন পণ্য/সেবার তুলনামূলক ভাবে সস্তা সলিউশন বের করুন
মার্কেটে অনেক সমস্যার অনেক সমাধান এক্সিস্ট করে। কিন্তু কিছু সেবা/পণ্য থাকে এক্সপেন্সিভ। যার কারণে অনেকেই এই প্রোডাক্ট গুলার দরকার মনে করলেও কিনতে পারে না। কিন্তু আপনি যদি সেই পণ্য অথবা সেবার তুলনামূলক ভাবে সস্থা সলিউশন ডেভেলপ করতে পারেন, তাহলে কিন্তু এখানে অনেক বিজনেস অপরচুনিটি আছে। VIVO, OPPO কিন্তু অনেকটা এই মডেলেই কাজ করছে। টেক ইন্ডাস্ট্রিতে আপনি আরো অনেক ব্র্যান্ড পাবেন যারা এভাবে বিজনেস করছে।
৫) একই দক্ষতা কিন্তু নতুন মার্কেট নিয়ে ভাবতে পারেন
আপনার বর্তমানে যে দক্ষতা আছে, তাকে কাজে লাগিয়েই আপনি নতুন ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। আপনাকে যেটা করতে হবে নতুন মার্কেট নিয়ে ভাবতে হবে। ধরেন আপনার বর্তমান দক্ষতা ঢাকা কেন্দ্রিক, এবং আপনি চাইলেই এটি চট্রগ্রাম এ শুরু করতে পারেন।
অথবা আপনি শুধু আমেরিকান ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করেন, আপনি চাইলেই সিঙ্গাপুর/ভারত ইত্যাদি ক্লায়েন্টদের কাছে এই দক্ষতাটাই সেল করতে পারেন।
অথবা আপনি এসইও সলিউশন দেন লোকাল বিজনেস গুলার জন্য, আপনি চাইলে ইকমার্স বিজনেসের এসইও এর জন্য কাজ করতে পারেন। নতুন ব্যবসা দাড় করাতে পারেন।
৬) এমন ইন্ডাস্ট্রি খুঁজে বের করুন যেখানে ইনোভেশন হয় না/কম হয়
সব ইন্ডাস্ট্রিতে কিন্তু সমান ভাবে ইনোভেশন হয় না। অনেক ইন্ডাস্ট্রি আছে গত ২০ বছর ধরেই একই জায়গায় থমকে আছে, সেখানে ইনোভেশন আনতে পারলে মার্কেট ধরা সহজ হয়। তাই এমন ইন্ডাস্ট্রি খুঁজে বের করতে পারেন যেখানে ইনোভেশন কম হয়। এবং সেই ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কাজ করতে পারেন, পয়েন্ট ১,২,৩ আপনাকে হেল্প করবে সেই ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিজনেস আইডিয়া খুঁজে পেতে।
সিক্রেট টিপস
১) নিজের সমস্যা গুলার লিস্ট ডাউন করুন, এর সমাধান বের করুন এবং এই সমাধানকে কেন্দ্র করে বিজনেস আইডিয়া সাজাতে পারেন
একজন প্রফেশনাল হিসেবে আপনি নিজে কিন্তু অনেক সমস্যার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছেন। এবং এর মধ্যে অনেক সমস্যা আছে যেটা আপনার মত আরও অনেকের জন্যই সমস্যা। তাই এরকম সমস্যাগুলার সমাধান বের করার জন্য কাজ করুন। এবং এর সমাধান বের করে ফেললে কিন্তু আপনি সেই সমাধানটাকে ঘিরেও আপনার বিজনেস আইডিয়া জেনারেট করতে পারেন।
২) পার্ফেক্ট হবার চেষ্টা করার দরকার নেই, পৃথিবীতে কিছুই পার্ফেক্ট না
আপনার প্রথম বিজনেস আইডিয়া নিয়ে যখন কাজ করবেন, এটা পার্ফেক্ট হবে এমন ভাবার দরকার নেই। প্রতি নিয়ত আপনাকে আপনার আইডিয়া এবং স্ট্রাটেজি মডিফাই করতে হবে এবং এটাই স্বাভাবিক। তাই পার্ফেকশনের চক্করে সময় নষ্ট করার দরকার নেই।
আমার ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করে না থাকলে এখান থেকে জয়েন করে নিন।
আমার ব্লগে প্রথম বার হলে আমার অন্য পোষ্ট গুলো পড়ুন। এবং আপনার ফিডব্যাক কমেন্ট সেকশনে জানান।